October 10, 2023

 আজকে আমার মনটা কেমন যেন ভিষনভাবে বিষন্ন হয়ে আছে। কারন আছে অবশ্যই। কারনটাও অবশ্য ওই একই, আমার ছেলেকে নিয়েই।

আলীফ বিগত ১০-১২ দিন থেকে কেন যেন অন্যরকম  আচরন করছে। স্কুলে নিয়ে যেতে চাইলেই প্রচন্ড রকমের বিদ্রোহ করে বসে, তারস্বরে চিৎকার করতে থাকে। কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা আমরা কেউই।

সবসময় রুমাই ওকে স্কুলে বা থেরাপিতে নিয়ে যায়, আজকে আমি নিয়ে গেছিলাম। স্কুলের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে গাড়ির মধ্যে থেকেই কান্না শুরু করে দিলো।

কিছুক্ষণ পরে কান্নার পরিমাণ যেন বাড়তে থাকলো। আমি নিজেকে যেন কন্ট্রোল করতে পারছিলাম না। কয়েকবার ওর গায়ে হাতও তুলে ফেললাম।

থেরাপিতে না দিয়ে সোজা বাসায় নিয়ে চলে আসলাম। বাসায় আসার সময়ও ওর সাথে খারাপ ব্যাভার করলাম, যদিওবা আলীফ ততক্ষণে কান্না থামিয়ে নরমাল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আমি যেন পুরো ব্যাপারটা সয্য করতে পারছিলাম না।

বাসায় এসে নিজের কাজে মন দিলাম। অনেকক্ষণ পরে আলীফ আমার রুমে আসলো, কিন্তু আমি তখনও ওর সাথে খারাপ ব্যাভার করে ঘর থেকে বের করে দিলাম। অথচ ও কিছু বুঝতে পারলো না তখন যে, বাবা কেন তার সাথে এমন করছে। আসলে ওর ওই বুঝ আল্লাহ তায়ালা এখনও দেয়নি।

নামাজ পড়তে বসে, আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি, কেঁদে ফেললাম আল্লাহর কাছে। আল্লাহ এত সুন্দর একটা উপহার আমাকে দিয়েছেন, কিন্তু তাকে এই পরীক্ষার মধ্যে আল্লাহ কেন ফেললেন? যদি আমার পরীক্ষা নিতে হয় তাহলে আল্লাহ অন্য কোন উপায়ে আমার পরীক্ষা নিতে পারতেন, আমার ছেলেকে দিয়েই কেন?

আমার ছেলে, আমার জন্য এতটাই আদরের যে আমার কাছে আমার দুনিয়া একদিকে, আর আমার ছেলেটা আরেকদিকে। আমার ছেলের কোন কষ্ট মানে আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার। এটা নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন। ভাবি, তাহলে পরীক্ষাটা আমাকেই আল্লাহ করছেন। কিন্তু এতে যে আমার ছেলেটার কষ্ট হচ্ছে, ওর শৈশবতো শেষ হয়ে যাচ্ছে, যাটা একটা মানুষের সবচাইতে আনন্দের সময়।

আল্লাহতো তার বান্দাদের স্পষ্ট করে বলেছেন, তোমরা চেষ্ঠা কর, আমি দেবো। আমিতো চেষ্ঠার কমতি করছি না, তবে আল্লাহ কবে আমার ছেলেকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে দিবেন?

- আমি ভাবি, আর অপেক্ষা করি, আল্লাহ কবে আমার এই অপেক্ষার অবসান ঘটাবেন? আমি জানি আর বিশ্বাস করি, সেইদিন বেশী দূরে নয়, তবুও যে আমার তর সয় না।

Post a Comment

0 Comments